বাঙালিরা জাতিগতভাবে দুটো জিনিসের পূজা করে : মূর্খতা ও দুর্নীতি
এরা টাকা ব্যয় করে মূর্খতা অর্জন করে; কিন্তু জ্ঞানচর্চার পেছনে টাকা খরচ করতে কুণ্ঠিত বোধ করে। এ-কথা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে যেমন সত্য, ওয়াজবাণিজ্যের ক্ষেত্রেও সত্য।
দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজের পূজা করে না এমন মানুষ এই সমাজে খুঁজে বের করা কঠিন।
একবার একজন বৃদ্ধ আমার পাশে বসে সহপাঠীর সাফল্যের কথা বলতে বলতে প্রায় কেঁদেই দিচ্ছিলেন; তাঁর সহপাঠী টিএন্ডটিতে চাকরি করে ঢাকায় বাড়ি করেছে, আর তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি করে কিছুই করতে পারেননি, কেবল ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন, এতটুকুই। অথচ তাঁরা দুজনই সত্তরের দশকে একসঙ্গে এসএসসি পাশ করেছেন।
এই বৃদ্ধ তাঁর বন্ধুর দুর্নীতির প্রতি নতশির হয়ে তাঁকে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন।
যে-লোক সৎভাবে কম টাকা উপার্জন করে, আত্মীয়-স্বজন ও সমাজের কাছে তার কোনো মূল্য নেই। তাদের কাছে সরকারি চাকরি মানেই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। সবাই টাকা দেখে; সততা-অসততা কেউ দেখে না।
আপনি থানার ওসি বা দারোগা, বা অন্য কোনো সরকারি চাকুরে, আপনি মসজিদে বা কোনো প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা দান করলেন, চারদিকে আপনার মহিমা রটিয়ে পড়বে। কেউ প্রশ্নও করবে না আপনার বেতন কত এবং আপনি এই টাকাটা কীভাবে উপার্জন করেছেন। আর যে তার সৎ উপার্জন থেকে সামান্য টাকা দান করবে, তার কথা কেউ বলবে না; বরং কৃপণ বলে দুর্নাম রটনার সম্ভাবনা থাকবে।
এই দেশে যতদিন মূর্খতা ও দুর্নীতি পূজনীয় হয়ে থাকবে ততদিন এই দুটি ব্যাধি থেকে কেউ মুক্তি পাবে না।
একদম সত্য