ক্ষমতাধর ভাই ব্রাদারগন কি ঘুমোচ্ছেন?

রনি ভাই লিখেছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের ক্ষমতাধর ভাই ব্রাদারগণ কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন নাকি আমাদের মতো গরীব আম জনতার দুঃখ – কষ্ট বেদনা এবং দূর্ভোগের কথা মনে করে বিনিদ্র রজনী পার করছেন। আমাদের খুব জানতে ইচ্ছে করছে যে, আপনাদের অফিস, বাসভবন কিংবা প্রমোদালয়ে কি আমাদের মতো ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে নাকি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের আলো-বাতাস এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্রের হিমশীতল পরশে পুলকিত বোধ করছেন ! আমাদের জীবন-জীবিকা, ব্যবসা – বানিজ্য এবং সুখ শান্তি ইদানিং কালে বিদ্যুতের অভাবে যে বরবাদ হতে বসেছে সে ব্যাপারে ভাই-ব্রাদারগনের পবিত্র মুখের খানিকটা অমৃতবানী শুনতে পেলে গরীব গরাবার মনে হয়তো একটু জান্নাতি সুখের আবেশ লাগতো।

সারাদেশের প্রচন্ড তাপদাহ, সামনের পবিত্র রমজান মাসের তারাবীহ, সেহেরি, ইফতার বা ঈদের কেনা কাটা বা বেচা বিক্রির জন্য হাট-ঘাট, বাজার -বিপনীতে বিদ্যুৎ না থাকলে দেশবাসীর লাভ ক্ষতির হিসেবটুকু যদি ক্ষমতাধর কর্তা ব্যক্তিরা একটু মেলাতেন তবে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের আল্লাহর বান্দারা বহুৎ সুখ শান্তি অনুভব করতেন। আমাদের মতো চাষাভূষা মানুষ নিজেদের গায়ের চামড়া, শরীরের রক্ত কিংবা উদরের অন্ন নিয়ে যতোটানা চিন্তিত তার চেয়েও বেশী চিন্তিত সাহেব সুবাদের বিত্ত বিলাস, পোশাক, আশাক এবং আনন্দ ফুর্তি নিয়ে। আমরা খেলাম কি খেলাম না- পারলাম কি পারলাম না অথবা বাঁচলাম কি বাঁচলাম না- সেটা মূখ্য নয়- মূখ্য হলো সাহেব সুবা বৃন্দের দামী স্যুট, টাই এবং অর্ন্তবাস যদি বিদ্যূৎ এর অভাবে ঘর্মাক্ত হয়ে ময়লা যুক্ত হয়ে পড়ে তবে এ জাতি মুখ দেখাবে কিরূপে ?

বিদ্যুতের অভাবে গরীব মানুষের ছেলেমেয়েদের লেখা পড়া, শ্রমজীবিদের কাজকর্ম, আহার – নিদ্রা, কৃষকের কৃষিকর্ম, গ্রহিনীদের রান্না বান্না, অসুস্থদের বেঁচে থাকা, হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদি যদি ব্যহত হতে হতে থেমেও যায় তবুও সাহেব সুবাদের কল্যানে এদেশ এবং এ জাতির উন্নয়ন থেমে থাকবে না। সাহেবদের জন্যই জিডিপি বাড়বে, দেশ উন্নত হবে, সরকার চলবে এবং ক্ষমতাসীনরা আবার ক্ষমতায় আসবে। কাজেই গরীবের জন্য নয়- বড়লোকদের বিনোদনের জন্য হলেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চাই। গত বেশ কিছুদিন যাবৎ বিদ্যুৎ নিয়ে যা হচ্ছে তা বিগত বিএনপি জোট সরকারের যমানার বিদ্যুৎ বিভ্রানেটর কথা বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছে। এভাবে যদি আরো কিছুদিন চলে তবে পরিস্থিতি যে বিএনপি যমানার চেয়েও খারাপ হয়ে পড়বে তা বলার জন্য বাঙালের অভাব পড়বে না।

বিদ্যুৎ বিভাগের অনিয়ম, দূর্নীতি, লুটপাট, বদনামী, ইত্যাদি সবকিছু হজম করার পরও যদি দেশের মানুষকে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয় তবে জনগনের ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে যেতে বাধ্য। কুইক রেন্টাল, উচ্চ মূল্যে পছন্দ মতো দেশী বিদেশী কোম্পানীর নিকট থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়, দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি অনিয়ম এবং সেচ্ছাচার গুলো যদি সামনে চলে আসে তবে সরকারের জন্য কোন মতেই তা শুভফল বয়ে নিয়ে আসবেনা। আমরা অতি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করছি যে, সারা দেশের সীমাহীন লোড শেডিং নিয়ে সরকার বা রাষ্ট্রের দায়িত্বপূর্ন কর্মকর্তারা একটু ও মাথা ঘামাচ্ছেন না – মনে হচ্ছে তারা সুখ নিদ্রার কবলে পড়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন।তারা যদি স্বেচ্ছায় ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেন তবে জনগনের চিৎকারে যদি নিদ্রাভঙ্গের কারন ঘটে তাহলে পরিস্থিতি কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ বলতে পারবেন।

Maniruzzaman

I am Maniruzzaman, a free thinker and political commentator, dedicated to unraveling the complexities of Bangladesh’s political landscape.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button