বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটাই উপায়

আগের লেখাটিতে এক পরহেজগার চোরের কাহিনী উল্লেখ করেছিলাম । পরহেজগার চোর সেই গৃহস্থকে বিভ্রান্ত করতে পারলেও সরকারের একইরূপ প্রচেষ্টা বিফলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে । কেঁচো খুড়তে গিয়ে অনেক সাপ বের হয়ে পড়ছে ।

জনমনে সৃষ্ট অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের , হানিফ এবং হাছান মাহমুদরা আরো গুবলেট পাকিয়ে ফেলছেন । নিজেদের সকল অপকর্মের দায় এখনও ১৩ বছর আগে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া নিরীহ বিএনপির উপর চাপানোর চেষ্টা চরম হাস্যকর ঠেকছে ।

বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে ধ্বংস করতে সরকারী কর্মচারী এবং নিজেদের পেটুয়া বাহিনী সমন্বয়ে যে ফ্রাংকেনস্টাইন তৈরি করেছিল তা সরকারকেই ধ্বংস করতে এগিয়ে আসছে । এমতাবস্থায় দুয়েকজনকে বলির পাঠা বানিয়ে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে বলে মনে হয় না ।

তাছাড়া অন্য একটি কানাঘুষাও জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে । সেটি হলো গৃহদাহ । কিছুটা পরহেজগারিও দেখানো হলো সাথে সাথে

আনুগত্য পরিবর্তনকারী নেতৃত্বের পরিণতি কী হবে তাও জানিয়ে দেয়া হলো ! তবে এতে শেষ রক্ষা কতটুকু হবে -তা স্পষ্ট নয়।

এক ব্যক্তির হাতে সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করায় ক্ষমতার পরবর্তী উত্তরাধিকার ঠিক করতেও চরম জটিলতায় পড়ে গেছে বলে অনুমিত হচ্ছে ।

উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক তার দাদার প্রিয় মেয়ে জামাইকে কিছুদিন আগে কুকুর দিয়ে ভক্ষণ করিয়েছেন । সেই ভিক্টিম ছিল সেই দেশের শাসক পরিবারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি !

কিছুদিন আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার পরিবারের সদস্যদের যে সংখ্যা জানিয়েছিলেন তাতে নিজের চাচাতো এবং ফুপাতো ভাইয়েরা বাদ পড়ে যান । এমতাবস্থায় শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা এই দুজনের মধ্যে কোনদিকে শাসন ক্ষমতা ধাবিত হবে – তার উপর নির্ভর করে কার রক্ত হবে ভবিষ্যতের শেখ সেলিম / শেখ হেলাল ! ভাগ্য খারাপ হলে এদের কেউ যে কোনো মুহূর্তে ‘ কিম জং-উন এর ফুপা’ও বনে যেতে পারেন ।

কাজেই গণতন্ত্রহীনতা শুধু দেশের মধ্যেই সমস্যা সৃষ্টি করবে না । শাসক পরিবারের অভ্যন্তরেও চরম জটিলতা সৃষ্টি করবে । কারও কারও অনুমান সেই জটিলতা শুরু হয়ে গেছে । বর্তমান টানাপোড়েন বা পরহেজগারিকে অনেকেই সেই গৃহদাহ বলে সন্দেহ করছেন ।

বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটাই উপায় । আর তাহলো দেশটিকে

গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনা । জানি না এটুকু বোঝার মত ধী শক্তি এবং প্রজ্ঞা শাসক শ্রেণীর মাঝে এখনো অবশিষ্ট আছে কি না ।

Maniruzzaman

I am Maniruzzaman, a free thinker and political commentator, dedicated to unraveling the complexities of Bangladesh’s political landscape.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button